চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

 চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা চিয়া সিড সম্পর্কে জানতে চান। আজকের এই আর্টিকেলের মূল বিষয় হচ্ছে চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা।

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
 চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

শরীর স্বাস্থ্যের জন্য চিয়া সিড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কারণে চিয়া। সিডকে বলা হয় সুপার ফুড।এটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকে। 

চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ

পুষ্টিগুনে ভরপুর এই চিয়া সিড।দুধ থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে এই চিয়া সিডে।ডিম থেকেও বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে চিয়া সিডে।

চিয়া সিডের উপকারিতা

চিয়া সিডে রয়েছে নানা রকমের পুষ্টিগুণ। দুধের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম। কলার থেকে রয়েছে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি। পালং শাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রন।কলার চেয়ে দুই গুণ বেশি পটাশিয়াম। মুরগির ডিমের চেয়ে তিনগুণ বেশি প্রোটিন  স্যামন মাছের চেয়ে আট গুণ বেশি ওমেগা-৩।ইত্যাদি আরো নানারকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে এই চিয়া সিডে।

চিয়া সিড এর উপকারিতা

১) এই চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা-৩।পুষ্টিবিদরা বলেছেন চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। হৃদ রোগের জন্য এই চিয়া সিড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 

২) এই চিয়া সিড শরীরের ভিতর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। 

৩) চিয়া সিডে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এই চিয়া সিডে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেয়।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে চিয়া সিড সাহায্য করে। 

৪) এই বীজ আমাদের শরীরের মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নতি করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করেন। 

৫) এই বীজ খেলে আমাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে যাবেন।তাই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে খেতে পারেন এই চিয়া সিড।

৬) চিয়া সিডে উপাদানগুলো কোলন পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ারও ঝুঁকি কমায়। 

৭) চিয়া বীজ এটিতে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে যায়।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকে হয়তোবা জানে না কিভাবে চিয়া সিড খেতে হয়।এই বীজ নিজস্বভাবে কোন স্বাদ না থাকার কারণে খাওয়া যায় না। এটি খেতে হয় অন্য কোন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে। বিশেষ করে এটি খাওয়া হয় সালাদ,কাস্টার্ড, স্মুদি যেকোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে। 

এই বীজ আপনি যদি খেতে এবং ভালো উপকার যদি পেতে চান তাহলে এটি খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাহলে এটি আপনি ভালো পরিমাণ পুষ্টিগুন পাবেন।

ডাক্তার গণেরা বলেছেন দ্রুত ওজন কমাতে হলে খালি পেটে সকালেও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে দুই চামচ চিয়া সিড এর সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে আপনি অনেক বেশি ভালো ফলাফল পাবেন। আর এভাবে খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তারগণেরা। 

চিয়া সিড এর অপকারিতা

একটা জিনিসের ভালো খারাপ খুবই দিক থাকে। তাই সবকিছু করিমের মত খাওয়া উচিত। তাহলে এতে করে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না আপনি। 

চিয়া সিডের অপকারিতা কি?

১) গবেষণা দেখা গেছে যে চিয়া সিড বেশি পরিমাণে খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই কখনো ভালো বলে বেশি খাবেন না। এটি নিয়মমাফিক খাবেন আপনি। 

২) পরিমাণের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেললে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনার। 

৩) অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে চিয়া বীজ খেলে অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যেতে পারে, এটি খারাপও হতে পারে। 

৪) আমাদের শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তচাপ কমায় এই চিয়া সিড বীজ।আর আপনি যদি বেশি পরিমাণ এই বীজ খেয়ে পেলেন তাহলে রক্ত সব কমে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এটি কখনো বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।  

প্রতিদিন কত চিয়া বীজ খেলে ওজন কমে?

ওজন কমাতে আপনি বীজ খেতে পারেন দই এবং ব্রেকফাস্টে দুধের সঙ্গে চিয়া বীজ মিশিয়ে। খেতে পারেন ওটসের সাথে।আপনি চাইলে পানির সঙ্গে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন।চিয়া সিড খেলে যে শরীরের ওজন কমে যাবে ব্যাপারটা এমন না।চিয়া বীজ খেয়ে যদি আপনি ওজন কমানোর জন্য নিয়ামিত ব্যায়াম করেন তাহলে এটাতে আপনি অনেক ভালো উপকার পাবেন।আর আপনি এই ভাবে খেলে অনেক ভালো একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন।ওজন কমানোর জন্য এই চিয়া সিড অনেক বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

চিয়া সিড কি রাতে খাওয়া যায়?

অবশ্যই চিয়া সিড রাতে খাওয়া যায়।আপনি চাইলে রাতে এই বীজ খেতে পারবেন।রাতে ঘুমানোর আগে আপনি এক গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে গেলে এটাতে অনেক বেশি ভালো উপকার পাওয়া যায় বলে জানিয়াছেন ডাক্তারগণ।

চুল গজানোর জন্য চিয়া বীজ খাওয়ার উপায়?

আপনার চুল গজাতে এই চিয়া বীজ সাহায্য করবে। এই বীজ চুল গজানোর জন্য কিভাবে ব্যবহার করবেন। তা অনেকে আমরা অনেকে জানিনা। নিচের পদ্ধতি দেওয়া হল। 

এটি তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনি পানিতে এই বীজ ভিজিয়ে রাখুন।ভিজিয়ে রাখা পানিটি জেলের মত হয়ে আসলে এতে নারকেল তেল দেন, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ও এর সাথে অর্ধেক কাপ মধু মিশিয়ে ঘণ করে নিলে মিশ্রণটি মাইক্রোওয়েভে গরম করে নিন।এরপরে তৈরি করার এই উপাদানটি মাথাতে লাগিয়ে আধা ঘন্টা অপেক্ষা করুন। এটি শুকিয়ে আসলে তারপর খুব ভালো করে মাথাটা ধুয়ে নেবেন। আপনি চাইলেও শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারবেন। এই পদ্ধতি যদি আপনি এক সপ্তাহ করে থাকেন তাহলে আপনি বেশ ভালো একটি পরিবর্তন দেখতে পারবেন।

 আমাদের শেষ কথা। এছাড়া আমাদের আজকের চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আর্টিকেল। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনাদের সবার উপকারে আসবে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url