হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার

 হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হচ্ছে হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার নিয়ে।আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন কোন কোন খাবারগুলো হার্টের জন্য ক্ষতিকর। 

হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার

হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার


যারা জানেন না হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার কি কি তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোন কোন খাবারগুলো হার্টের জন্য ক্ষতি এটা জানার জন্য আমাদের আর্টিকেলের সাথে থাকুন। 

অতিরিক্ত ভাজা পুরা ও তেল যুক্ত খাবারে বেশি ফ্যাট থাকতে পারে,এটা কিন্তু আমাদের হার্ট বা হৃদরোগে ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই আমাদের সবার উচিত এটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা। 

১) ফাস্টফুড।

ফাস্টফুড খারারে বেশি কোলেস্টেরল এবং ক্যালরি থাকতে পারে। আর এটি আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই এই খাবারটি আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত। 

২) কলিজা,মগজ,হাড়ের মজ্জা।

বিশেষ করে এই তিনটি খাবারে উচ্চ বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল ধারণ করে থাকে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে হৃদরোগের অথবা হৃদরোগীদের উচিত হবে এই ধরনের খাবারগুলোকে বিলম্বিত করা হবে সবচেয়ে ভালো হবে। 

৩) চিংড়ি।

বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকতে পারে চিংড়ির মাংসে।তাই এই ধরনের খাদ্যকে বিলম্বিত করা উচিত হৃদরোগীদের। 

৪) মাছের মাথা -ডিন।

আমাদের শরীরের রক্তে লিপিড প্রোফাইল বাড়ানোর জন্য মাছের মাথা ও ডিম উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড ধারণ করে। 

৫) ডিমের কুসুম। 

ডিমের কুসুমে থাকতে পারে পরিমাণে কোলেস্টেরল। তাই হৃদরোগীদের খুব সতর্ক উচিত ভাবে এটি খাওয়া উচিত। 

৬) ঘি-মাখন ডালডা।

ঘি-মাখন এবং ডালডাতে থাকতে পারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট।যা কিন্তু আমাদের হৃদরোগে ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষতিকর সম্ভাবনা থেকে আমাদেরকে বাঁচার জন্য আমাদের ব্যবহার করা উচিত হবে অলিভ অয়েল বা সান ফ্লাওয়ার অয়েল।

৭) নারিকেল। 

নারিকেলে থাকতে পারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট।আর এটি আমাদের ঝুঁকি বাড়াতে পারে হৃদরোগের। তাই আমাদের নারকেল তেলের সেবন হ্রাস করতে হবে।

৮) রেড মিট।

স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকতে পারে রেড মিটে এবং এটি হৃদরোগের উৎপাদন বাড়াতে পারে। তাই আমাদের উচিত হবে এটি খাওয়ার সীমাবদ্ধতা করা। 

৯) কেক,পেস্ট্রি,পুডিং,আইসক্রিম। 

এই ধরনের চিনি যুক্ত খাবার গুলো আমাদের শরীরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমাদের খাদ্য তালিকা থাকা এই খাবার গুলোর পরিমান একেবারে সীমাবদ্ধতা করে ফেলা উচিত। 

হার্টের রোগীর খাবার তালিকা

হার্ট সুস্থ রাখতে যে খাবারগুলো খেতে হবে তা হয়তো আমরা অনেকে জানিনা। হার্টের রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করা হলো। 

হার্টের জন্য উপকারী খাবার

আপনার হার্ট সুস্থ রাখতে আপনাকে যা যা খেতে হবে সেই খাবারগুলোর একটা তালিকা নিচে দেওয়া হল। 

১) সবুজ সবজি। 

সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনের উৎসব। সবুজ শাকসবজিতে থাকা উপাদান গুলো আপনার হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে অনেক বেশি সহায়তা করবে। 

২) রসুন।

রসুন আমাদের শরীরের হার্টের জন্য অনেক বেশি উপকারী। রসুন আপনি খেতে পারেন তরকারিতে ব্যবহার করে। আর এই রসুন আপনার হার্টকে সতেজ রাগবে।রসুন আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। 

৩) কমলা। 

কমলায় রয়েছে পেকটিন নামের আঁশ।যা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমিয়ে রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করে। কমলা আরও আছে পটাশিয়াম। যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এই ফলটি খাদ্য তালিকায় প্রতিনিয়ত রাখা আমাদের সবার উচিত। কারণ এই ফলটি হৃদরোগের জন্য অনেক উপকারী। 

৪) বাদাম। 

বাদাম আমাদের শরীরের হার্টের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাদামে রয়েছে প্রোটিন, আঁশ,খনিজ,ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। বাদাম এমনিতে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। তাই খাদ্য তালিকা আপনি রাখতে পারেন বাদাম। 

৫) স্ট্রবেরি।

স্ট্রবেরি ফলটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আপনার হার্ট সুস্থ রাখতে। ফলে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে রয়েছে যা আপনার হার্টকে রাখে সুস্থ এবং মানসিক চাপ মুক্ত করতে সহায়তা করে। বিভিন্ন গবেষণা দেখা গিয়েছে স্ট্রবেরি ফল খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এই ফলটি আসলেই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। 

৬) ডার্ক চকলেট। 

ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ রাখে। এতে হাইপারটেশন বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। তাই আপনি পরিমাণ মত ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। 

৭) মাশরুম।

মাশরুমে রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।যা আমাদের হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 

৮) টক দই। 

টক দই এর মধ্যে থেকে পাওয়া যায় প্রোবায়োটিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। টক দই হার্টের জন্য অনেক ভালো। টক দই হার্টের সুরক্ষা করে। টক দই রোগ প্রতিরক্ষমতা বৃদ্ধি করে। টক দই শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। 

৯) বীজ জাতীয় খাবার। 

তিল,সিয়াসিডের মতই বীজ জাতীয় খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা ফ্যাটিঅ্যাসিড।শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে ওমেগা৩।বিশেষ করে এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। 

১০) ওটমিল।

হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সহায়তা করে থাকেন ওটামিল।ওটামিলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ।এই ওটামিল কিন্তু কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকেন। 

১১) গ্রীন টি।

হৃদয়ে রোগের ঝুঁকি কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই গ্রিন টি। অনেক গবেষণা দেখা গিয়েছে গ্রিন টি আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অনেক বেশি সহয়তা দিয়ে থাকেন।শুধু তাই না আমাদের শরীরে গ্রিন টি রক্ত জমাট বাধতে দেয় না।যার ফলে আমাদের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশ কমে যায়। 

১২) সামুদ্রিক মাছ। 

সামুদ্রিক মাছ হার্টের এর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা৩।আপনি খেতে পারেন রূপচাঁদা, কোরাল,রুপসা, লাক্ষা জাতীয় মাছ। এই গুলো সব বাংলাদেশী মাছ। আর বিদেশী মাছ খেতে পারেন টুনা,স্যামন,সারডিন,ম্যাকারেল,হেরিং ইত্যাদ মাছগুলো আপনি সংগ্রহ করে খেতে পারেন। আর এসব মাছগুলো আপনার হার্টের জন্য খাওয়া অনেক বেশি ভালো হবে। 

হার্ট ভালো রাখার উপায়

আমরা অনেকে জানি না। হার্ট ভালো রাখার উপায় কি।আপনাদেরকে ছোট্ট কিছু পরামর্শ দিয়ে যাব যে পরামর্শ গুলো মেনে চললে আপনার হার্ট ভালো থাকবে ইন শা আল্লাহ। 

১) আপনাকে সব সময় খাবার খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

২) শর্করা এবং চর্বি জাতীয় খাবার আপনাকে কম খেতে হবে। 

৩) আমিষের পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খেতে হবে।

৩) হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই সাপ্তাহে কমপক্ষে 5 দিন আধাঘন্টা করে হাঁটতে হবে। 

৪) আমরা যখন শপিং মহলে যাই লিফটে চলাচল করি। লিফটে চড়া এড়াতে হবে।

৫) একটানা বেশিক্ষণ সময় ধরে বসে থাকা যাবে না। 

৬) ধূমপান অবশ্যই আপনাকে ত্যাগ করতে হবে। 

৭) ওজন, রক্তচাপ সুগার সব সময় নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। 

৮) নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে খাদ্যাভ্যাস, হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মধ্যমে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। 

আমাদের শেষ কথা। এই ছিল আমাদের আজকের হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার নিয়ে আর্টিকেল। আশা করছি আজকে আর্টিকেল থেকে আপনারা হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url